“যে ২৫ বছর মনিয়ের বন্দী ছিলেন সে সময়টাতে উনি একবারের জন্যও সূর্যের আলো দেখেননি। অন্ধকার যে ষ্টোর-রুম থেকে পুলিশ বীভৎস ও মৃতপ্রায় মনিয়েরকে উদ্ধার করেন তার গন্ধ এত প্রকট ছিলো যে, কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেখানেই বমি করে দেন।”
নিঃসঙ্গতার ১০০ বছর তো অনেকেই পড়েছেন; মাস্টারপিস একটা উপন্যাস। গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ এই এক উপন্যাসেই নিজের জাত চিনিয়েছিলেন। কিন্তু ভালবাসার শাস্তি হিসেবে নি:সঙ্গতার রুপ কত বীভৎস হতে পারে আপনাদের হয়তো ধারণাই নেই।
সময়টা ১৯০১, প্যারিসের এটর্নি জেনারেল একটি বেনামি চিঠি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। প্রেরকের কোন স্বাক্ষর বা ঠিকানা ছাড়া এ চিঠিকে গুরুত্ব দেওয়া ঠিক হবে কিনা এ নিয়ে বেশ কিছুটা দ্বিধান্বিত। তবে চিঠির ভেতরে যা লেখা তা রীতিমত ভয়াবহ। চিঠিতে দাবি করা হচ্ছে মাদাম মনিয়েরের বাসায় কাউকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
এটর্নি জেনারেলের অস্বস্তির মূল কারণ হলো যার নামে এ অভিযোগটি আনা হয়েছে সেই ভদ্র মহিলা, মাদাম মনিয়ের প্যারিসের একজন নাম করা ব্যক্তিত্ব। সম্ভ্রান্ত এ পরিবারটির পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা সর্বজনবিদিত। তার প্রয়াত স্বামী এমিলি মনিয়ের শহরের আর্ট ফ্যাকাল্টির ডিরেক্টর ছিলেন এবং তার ছেলে মারসেল মনিয়ের একজন স্বনামধন্য উকিল। অন্যদিকে মাদাম মনিয়ের নিজে একজন সম্মানীত মহিলা যিনি তার দানশীলতার জন্য আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পর্যন্তও পেয়েছেন। ফলে এমন একটি পরিবারের বিরুদ্ধে এই বেনামি চিঠিকে প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে কিনা সে বিষয়ে এটর্নি জেনারেল ঠিক মনস্থির করে উঠতে পারছেন না। আবার একই সাথে চিঠিটিতে এমন কিছু রয়েছে যা তিনি ঠিক উপেক্ষাও করতে পারছেন না।
“Monsieur Attorney General: I have the honor to inform you of an exceptionally serious occurrence. I speak of a spinster who is locked up in Madame Monnier’s house, half starved, and living on a putrid litter for the past twenty-five years – in a word, in her own filth.”
এটর্নি জেনারেলকে পাঠানো বেনামি চিঠিতে যা লেখা ছিল। source: Wikimedia Commons

অবশেষে এটর্নি জেনারেল বিষয়টি আমলে নেওয়ার জন্য মনস্থির করেন এবং ২১ রিউ ডি ল্যা ভিজিটেশনের মাদাম মনিয়ের বাসায় অনুসন্ধান চালানোর নির্দেশ দেন। স্থানীয় পুলিশ এটর্নি জেনারেলের নির্দেশ মোতাবেক মাদাম মনিয়ের বাসায় হাজির হলেন। তবে বাড়িতে কোথাও তেমন সন্দেহজনক কিছুই পাওয়া না যাওয়ায় যখন পুলিশ ফিরে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন তরুণ এক অফিসারের নাকে কিছু একটা অদ্ভুত গন্ধ ধরা পড়ল। গন্ধ অনুসরণ করে অফিসারটি ওপরতলার একটি তালাবন্ধ কুঠুরিতে পৌঁছালেন। ছোট্ট কুঠুরির কাঁচের জানাল ঢাকা পড়ে আছে পুরু পর্দায়। ঘর থেকে বের হওয়া বোটকা গন্ধ কিছু একটা অসঙ্গতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। অন্যান্য পুলিশ অফিসারগণ যখন কুঠুরির কাছে পৌঁছালেন তখন অনুসন্ধানে নেতৃত্ব দানকারী অফিসারের নির্দেশে জানালার কাঁচ ভেঙে কুঠুরিতে প্রবেশ করা হয়। তবে কুঠুরির ভেতরে ঢুকে অফিসাররা যে দৃশ্য দেখলেন তার জন্য তারা মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না।
সেদিন অফিসাররা চিলেকোঠার বদ্ধ কুঠুরিতে যেভাবে অবরুদ্ধ হতভাগ্য নারীকে দেখতে পেয়েছিলেন; একজন রুগ্ন, কঙ্কালসার মহিলা নগ্ন শরীরে চাদরবিহীন জীর্ন গদিতে শেকল পরা অবস্থায় শুয়ে আছেন। কুঠুরির মেঝেতে ছড়িয়ে আছে পচে নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার, টুকরো রুটি, মাছ-মাংস, ঘরময় মেঝে ছেঁয়ে আছে শত শত কীট আর ইঁদুর আর নোংরায়। ধুলিময় নোংরা অন্ধকার কুঠুরিটির দমবন্ধ করা গন্ধে অফিসারদের পক্ষে সে ঘরে বেশি সময় অবস্থান করা আর সম্ভব হলো না।

অবরুদ্ধ নারীটির পরিচয়
শুনতে অবাক লাগলেও হতভাগ্য নারীটি হচ্ছেন ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের, সম্ভ্রান্ত সম্মানীত মনিয়ের পরিবারের কন্যা এবং উদারতা ও দানশীলতার জন্য বিখ্যাত মাদাম মনিয়েরের নিজ গর্ভের সন্তান। ১৮৪৯ সালের ১লা মার্চ। পরিবারটিতে জন্ম নেয় ফুটফুটে এক কন্যা শিশু। পরিবারের পদবির সাথে মিলিয়ে শিশুটির নাম রাখা হয়- ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের। ছোটবেলা থেকেই ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের ছিলেন আহ্লাদী এবং হাসিখুশি প্রকৃতির, ছিলেন সুন্দরীও। মেয়ে ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের ছাড়াও এক ছেলে ছিল ব্ল্যাঞ্চ পরিবারের। নাম- মার্সেল মনিয়ের, যিনি পেশায় ছিলেন একজন বড় উকিল। ছাত্রজীবনেও তিনি ছিলেন অসাধারণ। সবকিছু নিয়ে সুখী পরিবার ছিলেন মনিয়েররা।

তাহলে ঠিক কি হয়েছিল যার জন্য মাদাম মনিয়েরের নিজের সন্তানকে এভাবে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন সেটি জানতে হলে আমাদের কে পিছিয়ে যেতে হবে প্রায় ২৫ বছর পূর্বে ১৮৭৪ সালে। তখন ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের ফুটফুটে একজন তরুণী যার রুপের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র। স্বভাবতই ব্ল্যাঞ্চের পরিবার তখন তার বিয়ের কথা ভাবছে। সম্ভান্ত পরিবার হিসেবে মাদাম মনিয়েরও তার কন্যার জন্য অভিজাত পরিবারের খোঁজ চালাতে লাগলেন যেখানে তার মেয়েকে উপযুক্ত পাত্রের সাথে বিবাহ দিতে পারেন। মেয়ের জন্য শহরের সম্ভান্ত ও ধনী পরিবারের একজন উকিলকে পছন্দও করেন তিনি। কিন্তু যার জন্য এতো আয়োজন সেই ব্ল্যাঞ্চ মনিয়েরের মন পড়ে আছে শহরেরই আরেকজন সাধারণ উকিলের ওপর। পারিবারিক মর্যাদার দিক থেকেও মনিয়েরদের থেকে অনেক পিছিয়ে।
ব্ল্যাঞ্চ তার ভালোবাসার কথা সোজাসুজি জানিয়ে দেয়। ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে হাজির হয় মায়ের সামনে। ম্যাডাম মনিয়ের দেখলেন লোকটির বয়সও ব্ল্যাঞ্চের থেকে অনেক বেশি। এছাড়াও পারিবারিক অমর্যাদা ও সম্ভ্রান্ত না হওয়ায় সব কিছু মিলিয়ে শক্তভাবে তাদের বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায় ম্যাডাম মনিয়ের। তার পছন্দ করা ছেলেকেই বিয়ে করতে হবে বলে সে কড়া ভাবে জানিয়ে দেয় মেয়েকে। মেয়েও সাফ বলে দেয় বিয়ে করতে হলে সে তার ভালোবাসার মানুষটিকেই করবে! মা মেয়েকে ফেরানোর চেষ্টা করেন কিন্তু মেয়ে তার কথায় অনড়। মাও রাজি হননা কিছুতেই। এ নিয়ে মা ও মেয়ের মধ্যে চলতে থাকে বাক-বিতন্ডিতা, বাড়তে থাকে দূরত্ব। বিষয়টি ছেলে মারসেল জানার পর মায়ের প্রতি সম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং বোনের এ সম্পর্ক মেনে নিয়ে অস্বীকৃতি জানান। অন্যদিকে মেয়েও জিদ ধরে বসে থাকেন নিজের পছন্দ করা ছেলেকেই বিবাহ করবেন তিনি।

মেয়ের এ অবাধ্যতায় ক্ষুব্ধ হয়ে মা ও ছেলে মিলে ব্ল্যাঞ্চকে উপযুক্ত শিক্ষা দেবার জন্য মনস্থির করেন। প্রেমিকার সাথে দেখা করে রাতে যখন ব্ল্যাঞ্চ বাসায় ফিরে আসেন তখন সিড়ির বাঁকে আধারে লুকিয়ে ছিলেন মা মাদাম মনিয়ের এবং ভাই মারসেল মনিয়ের। আচমকা মা ও ভাইয়ের বাহু বন্ধনে আটকে পড়েন ব্ল্যাঞ্চ। তারপর থেকে তার স্থান হলো বাড়ির চিলেকোঠার অন্ধ কুঠুরিতে। মা জানিয়ে দিলেন মায়ের পছন্দের ছেলের সাথে বিয়েতে সম্মত হলে তবেই মিলবে মুক্তি। অন্যদিকে মেয়েও তার নিজ সিদ্ধান্তে অটল হয়ে থাকলেন। ইতিমধ্যে মেয়ের প্রেমিক হঠাৎ মারা গেলেও মায়ের ক্ষোভের কোন পরিবর্তন দেখা যায় নি।
অন্যদিকে মেয়ের এ আকস্মিক অন্তর্ধানকে পরিবার রহস্যজনক বলে সকলের সামনে তুলে ধরেন এবং মেয়ের জন্য তাদের শোকের বহিঃপ্রকাশে বাইরের মানুষজনও সান্তনা জানাতে এগিয়ে আসেন। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ তদন্তে নামলেও তা অমীমাংসিত থেকে যায় এবং কিছুদিন যেতে না যেতে তদন্ত কার্যক্রমও থেমে যায়। অবশেষে দীর্ঘ ২৫ বছর পর বেনামী পত্রের হাত ধরেই উদ্ধার হন ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের। ২১ রিউ ডি ল্যা ভিজিটেশনের অন্ধ কুঠুরিতে ব্ল্যাঞ্চ মনিয়েরকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এটি মা ছেলে ও বাড়ির কাজের লোকের মাঝেই কেবল সীমাবদ্ধ ছিল।

পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে বাড়ির পরিচারিকা জানান পরিবারের মনিবের সামজিক প্রতিপত্তি ও ক্ষমতার ভয়েই তিনি কখোনও পুলিশ বা কারো কাছে এ ব্যাপারে মুখ খোলেন নি। যদিও আজও পর্যন্ত সে বেনামী চিঠি প্রেরকের পরিচয় অজানায় থেকে গেছে তবুও ধারণা করা হয়ে থাকে হয়ত এই গৃহপরিচারিকার স্বামী চিঠিটি প্রেরণ করে থাকতে পারেন।
ব্ল্যাঞ্চ মনিয়েরকে দীর্ঘ ২৫ বছর পর যখন উদ্ধার করা হয় তখন তার ওজন মাত্র ২৪ কেজি। মানসিকভাবেও ব্ল্যাঞ্চ তখন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে আলোতে অত্যন্ত অস্থির হয়ে পড়তেন তিনি। তার পরিচর্যাকারী নার্সেরা জানার বেশিরভাগ সময়ই তিনি চুপচাপ এবং নিজের মধ্যে হারিয়ে থাকতেন। তবে আলোতে আনলে বা গোসলের সময় এবং পোষাক পরিবর্তনের সময় তিনি অস্থির হয়ে পড়তেন। তাকে ফ্রান্সের একটি সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় এবং জীবণের বাকি দিনগুলো এ হাসপাতালেই কাটিয়েছেন তিনি।

ব্ল্যাঞ্চকে উদ্ধারের পর তার মা এবং ভাইকেও গ্রেফতার করা হয়। পুরো সময়টিতে মাদাম মনিয়ের শান্ত ও স্বাভাবিক ছিলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং তার আগ্রাসী ও আক্রমনাত্মক আচরণের কারণে তাকে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। পরে অবশ্য মনিয়েরের মা স্বীকার করেছিলেন,সমস্ত ভুলটাই তাঁর। উনি সোসাইটিকে মেয়ের গায়েব হওয়া যাওয়া নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন; মেয়েও নাছোড়বান্দা ছিলেন,বিয়ে করলে ঐ চাল চুলো হীণ আইনজীবীকেই করবেন। কিছুদিন পর মনিয়েরের মা তাঁকে অবমুক্ত করতেও চেয়েছিলেন, কিন্তু ততদিনে যে উনি উনার তথাকথিত সোসাইটিকে মেয়ের গায়েব হওয়া নিয়ে ভুলভাল বুঝিয়ে ফেলেছেন। এখন মেয়েকে ছেড়ে দিলে সমাজকে কি জবাব দিবেন। এ চিন্তা থেকেই উনি মেয়েকে আর কখনো ছাড়েন নি!

পুলিশ কাস্টডিতে কিছুদিন থাকার পরই অসুস্থ হয়ে পরেন ম্যাডাম মনিয়ের, এরপর তিনি জামিন পেলে বাসায় চলে আসেন। ততদিনে চারিদিকে ঘটনা জানাজানি হয়ে গেছে। পত্রিকাগুলো এ রোমহর্ষক সংবাদ প্রকাশ করলে শহরের জনসাধারণ মা ও ভাইয়ের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। মনিয়েরদের বাসার বাইরে সবসময়ই বিক্ষুব্দ জনতার ভিড় জমে থাকত। এই জনতার ক্ষোভ এতটাই মারাত্নক ছিল যে এই ঘটনার ১৫দিনের মাথায় ম্যাডাম মনিয়ের হার্ট এট্যাক করে মারা যান।

মারসেল মনিয়েরকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় এবং তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। তাকে ১৫ মাসের জেল দেওয়া হয়। তবে তিনি প্রভাব খাটিয়ে জামিনে বেরিয়ে আসেনন। যদিও আদালত বলেছিলেন তৎকালীন ফরাসি পেনাল কোড মতে উনি অপরাধী নন!
মানসিক হাসপাতালে ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের এর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও তিনি আর কখনোও স্বাভাবিক জীবণে ফিরতে পারেন নি। জীবণের শেষ ১২ টি বছর ফ্রান্সের সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালেই অতিবাহিত করে ১৩ অক্টোবর ১৯১৩ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
প্রেমিকের পরিচয়
যার জন্য এত কান্ড তাঁকে নিয়ে তো কিছুই বলা হল না! তাঁর সম্পর্কে খুব বেশি জানা যায়নি। যতটুকু জানা যায়, ১৮৭৪ সালে মনিয়েরকে অবরুদ্ধ করেন তাঁর মা। ১৮৮৫ সালে সেই প্রেমিক মারা যান। অনেকেরই ধারণা মনিয়ের পরিবারের এক ভৃত্যের সাথে যোগাযোগ ছিল সেই প্রেমিক আইনজীবীর। ১৯০১ সালে সেই ভৃত্য চাকরি ছেড়ে দেন এবং এ্যাটর্নি জেনারেলকে বেনামী চিঠি সেই ভৃত্যই লিখেছিলেন!
হসপিটালে মনিয়ের যখন চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তখন পুরোটা সময় মনিয়ের সেই প্রেমিকের ঘোরে আচ্ছন্ন ছিলেন! সেই ঘোর থেকে বেরোতে পারেননি বাকীটা জীবন তিনি! ফরাসি মিডিয়ায় অনেক ধরণের গাল-গল্প ফাঁদা হয়েছিল এই ঘটনা নিয়ে। অনেকেই সিনেমা বানানোর চেষ্টা করেছিলেন এ ঘটনা নিয়ে; তবে মনিয়েরের আপত্তির কারণে তা আর হয়নি। তার মৃত্যূর পর ১৯৩০ সালে আন্দ্রে গিড নামে একজন লেখন তাঁর ঘটনাকে ভিত্তি করে একটা উপন্যাস লিখেন।

প্রণয় ও বিরহের অসংখ্য উপন্যাস উপকথা বা রূপকথা ছড়িয়ে আছে দেশ-বিদেশের সাহিত্য সম্ভারে। সেদিক থেকে ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের নিজেই একটি বিরহ গাঁথা। ভালোবাসার মূল্য হিসেবে যাকে জীবণের ২৫টি বছর অন্ধকার কুঠুরিতে বন্দী হয়ে কাটাতে হয়েছে। পাশাপাশি এটিকে তৎকালীন ফ্রান্সের অভিজাত ও রক্ষণশীল সমাজ প্রথারও একটি নির্মম বলি বলা যায়। তবে ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের তার ভালোবাসার প্রতি ত্যাগ ও উৎসর্গের কারণে ইতিহাসের পাতায় এবং প্রেমিক-প্রেমিকাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবেন।
Featured image source: Twitter.com